জোনাকি পোকায় তারার আলো
| মু. ইকরামুল হাসান |
![]() |
জোনাকি পোকা |
এরকম আলোদানকারী জীবের
বিস্তৃতি কতটুকু তা আমাদের সবার আগে জানা প্রয়োজন। অনেকেই ভেবে বসতে পারো শুধু
বুঝি জোনাকি পোকাই এ আলো তৈরির বাহাদুরি করতে পারে। কিন্তু না উদ্ভিদ ও স্তন্যপায়ী
প্রানি ছাড়া মোটামুটি বাকি সব শ্রেণির মধ্যেই এ রকম জীব রয়েছে। তবে এরা বেশিরভাগই
সামদ্রিক, স্বাদু
পানিতে এদের পাওয়া যায় না। তাই আমাদের দেশে জোনাকি পোকা ছাড়া অন্য কোনো প্রজাতি
চোখে পড়ে না। একই কাজ করতে সক্ষম আরো কিছু প্রাণী হচ্ছে ব্ল্যাক ড্রাগন ফিশ,
ক্যাট শার্কসহ বিভিন্ন ধরনের মাছ এক ধরনের স্কুইড, ক্লিক বিটল নামের পোকা, এমনকি এ তালিকায় আছে
ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকের নামও।
![]() |
লুসিফেরিন |
এই আলো তৈরির প্রধান
উপাদান লুসিফেরিন। লুসিফেরিন বিন্যস্ত হয়েই আলো উৎপন্ন করে। এর পাশাপাশি লুসিফেরেজ
এনজাইম অথবা ফটোপ্রোটিন এ দুটির একটি লাগবেই। লুসিফেরেজ এনজাইমের প্রভাবে
লুসিফেরিন অক্সিজেন দ্বারা জারিত হয়। এটিই হচ্ছে সেই কাক্সিক্ষত বিক্রিয়া যার
মাধ্যমে আলো তৈরি হয়। এই বিক্রিয়ায় যে শক্তি উৎপাদন হয় তা আলোক শক্তির আকারে
নির্গত হয়। অক্সিলুসিফেরিন নামে একটি যৌগও বাইপ্রোডাক্ট হিসাবে পাওয়া যায়।
![]() |
লুসিফেরিন রসায়ন |
Bioluminescence নিয়ে এখনও খুব
বেশি গবেষণা হয়নি। তবে জীববিজ্ঞানী এবং জৈবরাসায়নিক প্রকৌশলীরা চিন্তা করছেন এই
জীবগুলোকে কিভাবে মানুষের কল্যাণে লাগানো যায়। কিছু বাস্তব প্রয়োগও আছে। যেমন
পানির বিষাক্ততা পরীক্ষা করার জন্য ‘Microtox’
ব্যবহার করা হয়। এতে থাকে আলো প্রদানকারী ব্যাক্টেরিয়া Vibrio
fischeri।
যখন পানিতে কোনো
বিষাক্ততা থাকে তখন এটির আলোর তীব্রতা কমে আসে। ইতো মধ্যে জোনাকিকে মানুষের দৈনন্দিন কাজে উপকারে
লাগানোর জন্য কিছু ধারনাও তৈরি হয়েছে। যেমন প্রথমে বলেছিলাম কিছু ছত্রাক গাছে লেগে
থেকে আলো তৈরি করে। এই গাছগুলো যদি রাস্তায় ব্যবহার করা হয় তবে রাস্তাও বিদ্যুৎ
ছাড়া আলোকিত হবে। সে মৃদু আলোতে হাটতে কেমন লাগবে ভাবতে পারো !
•••মাসিক পত্রিকা অবলম্বনে•••©
Comments
Post a Comment