আমাদের পরিবার : দুটো বিয়ের মোহরানার গল্প

ছোট ভাইয়ের বিয়ের জন্য কথা বার্তা চলছে। মোহরানার কথা আসল। আমি বললাম ছেলের সামর্থ্য অনুযায়ী সম্মানজনক মোহরানা নির্ধারণ জরুরী। অবশ্যই পরিশোধ করতে হবে। মেয়ে পক্ষ আমাদের থেকেও ইতিবাচক উদারতা দেখালেন। ২৫০০০ টাকা দেনমোহর নির্ধারণ করা হল। এলাকায় বেশ কানাঘুষা হলো এতো কমটাকায় মাওলানার ছেলের দেনমোহর নির্ধারণের কারণে। অনেকেই বলাবলি করল পরের মেয়ে পানির দামে আনছে নিজের মেয়ের বেলায় দেখা যাবে কত কম নেয়! ছোট ভাইয়ের বিয়ে যখন হয় তখন ও বেকার। অথচ আব্বার সাইনবোর্ড বা মেয়ে পক্ষ মামাদের আর্থিক বিবেচনায়, আমাদের সাতক্ষীরা এলাকার বিয়ের বাজার হিসাবে দেনমোহর লক্ষাধিক টাকা হবার কথা ছিলো। কিন্তু ওই সময় ছোট ভাই অত টাকা শোধ করতে পারত না।
আলহামদুলিল্লাহ্, ও এখন বৌ বাচ্চা ব্যবসা নিয়ে ভালোই আছে। পড়ালেখাও বন্ধ করেনি।
আলহামদুলিল্লাহ্, ও এখন বৌ বাচ্চা ব্যবসা নিয়ে ভালোই আছে। পড়ালেখাও বন্ধ করেনি।
খ.

পরের বছর ছোটবোনের বিয়ের জন্য কথা উঠলো। আম্মাকে স্মরণ করিয়ে দিলাম ছোটভাইয়ের বিয়ের দেনমোহরের কথা। মা বললেন, আমরাও ভেবে রেখেছি তোমাদের ভাইদের মত বোনদের ক্ষেত্রেও জামাইয়ের সামর্থ্য অনুযায়ী সম্মানজনক দেনমোহর নির্ধারণ করা হবে। খুব দ্রুতই ছোট বোনের বিয়ে ঠিক হয়ে গেলো ও তখন আলিম পড়ে। ছেলে মার্কেটিঙে চাকরি করে। সৎ ও পরিশ্রমী। দেনমোহরের কথা উঠল, ছেলে নিজে থেকে প্রস্তাব করল আমি দেনমোহর পরিশোধ করতে চাই অতিরিক্ত দেনমোহর দাবি করবেন না। ওর ২৫০০০ টাকার প্রস্তাবে সবাই আলহামদুলিল্লাহ্ বললেন। অথচ, আব্বার সাইনবোর্ড, ওর চাকরি সব মিলে আমাদের সাতক্ষীরার বিয়ের বাজারে দেনমোহর হবার কথা কমের উপর লক্ষাধিক। কিন্তু আমরা দেখেছি ছেলের সামর্থ্য। দেনমোহর বাণিজ্য করেনি। বোনের বিয়ের মোহরানা দেখে ছোটভাইয়ের বিয়ের দেনমোহর কম হওয়ায় যারা সমালোচনা করেছিলেন তারা চুপসে গেলেন। ছোটবোনের বিয়ে হয়ে গেলো।
আলহামদুলিল্লাহ্, বেশ ভালো আছে ওরা, বোনটা আলিম পাস করেছে, ফাজিলও পড়ছে।
আলহামদুলিল্লাহ্, বেশ ভালো আছে ওরা, বোনটা আলিম পাস করেছে, ফাজিলও পড়ছে।
•
আমি দেনমোহর বাণিজ্যের জুলুম ভাঙতে চেয়েছিলাম। আপন পরিবার আত্মীয় থেকে মহাল্লা ও বন্ধুদের অনেকেই সাথে পেয়েছি। মোহরানারা ছেলের সামর্থ্য ও মেয়ের সম্মানজনক রাখা ও পরিশোধ করার ব্যাপারে ইতিবাচক সাড়া পেয়েছি খুব।
Comments
Post a Comment